রুকইয়া করার নিয়ম
এই পর্যায়ে আমরা রুকাইয়া করার নিয়ম নিয়ে আলোচনা করবো। এখানে রুকাইয়া কি? কত প্রকার, রুকাইয়া কেন করা হয়, রুকাইয়া করতে কি কি প্রয়োজন, বদনজরের রুকাইয়া,কোন কোন ক্ষেত্রে রুকাইয়া করা লাগে এবং কি কারনে রুকাইয়া করা লাগে তা নিয়ে বিস্তারিত। আশা করি নতুন কিছু শিখতে পারবেন অথবা বুঝতে পারবেন এবং করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।
রুকাইয়াহ বা সেল্ফ রুকাইয়া কি?
প্রথমত, আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা বিভিন্ন রোগ,বদনজর, কালো জাদুর মধ্যে ভোগেন। কেউ কেউ এই সব কারনে অনেক মাজারে ,কবিরাজ,তান্ত্রিক এবং ভন্ড পীর এর শরনাপন্ন হন। অনেক কবিরাজ,তান্ত্রিক,মাজার পূজারীরা রোগীদের উপর কুফুরী করে রোগীদের জীবন নষ্ট করে দেয়।
দ্বিতীয়ত, আমাদের মধ্যে অনেকেই জানেন না যে ইসলামে এই সকল রোগের চিকিৎসা অনেক আগে থেকেই আছে (প্রায় ১৪০০ বছর আগে থেকে) । ইসলামে এই সকল খারাপ কিছু থেকে মুক্তি পাবার জন্য কোরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী রুকইয়া করা হয়।
সেল্ফ রুকাইয়া হলো কোন প্রফেশনাল কোন ওস্তাদ ব্যাতিত বা রুকাইয়া করতে জানে এমন কোন ব্যাক্তি ব্যাতিত নিজেই নিজের রুকাইয়া করে স্বুস্থ হওয়ার প্রক্রিয়া। এতে করে নিজেই নিজের সমস্যা অনুযায়ী রুকাইয়া করে স্বুস্থ হওয়া যায়।
রুকইয়াহ কী ? (সংঙ্গা)
ইসলামি ভাষাই রুকইয়াহ হলো কোনো ব্যাক্তি কুরআনের আয়াত, দোআ কিংবা আল্ল-হ্ তাআলার নাম বা সিফাত বিশেষ কোনো উদ্দেশ্যে যেমনঃ অসুস্থার জন্য বা কোনো লক্ষ্য অর্জনের জন্য একমাত্র আল্ল-হ্ র সাহায্য চেয়ে পাঠ করে,সেটাকেই রুকইয়া বলা হয়।
রুকইয়াহ করার কারণঃ
শারীরিক, মানসিক, আত্নিক রোগের জন্য রুকইয়া করা হয়। তবে রুকইয়া মানে কোনো দ্রুত বিবাহের তাদবীর বা কোনো কাজ দ্রুত করা বা কোনো জাদুটোনা করে কারোর কোনো ক্ষত্য সাধন করার মাধ্যম নয়। আর সেটা রুকাইয়া উদ্দেশ্যও নয়।
রুকইয়াহ করার মূল কারণ হচ্ছে ইসলামী শরীয়া মোতাবেক একটি চিকিৎসা পদ্ধতি,যার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা করা হয়।
রুকইয়াহ জন্য কিছু প্রয়োজনীয় সূরাঃ
১। সূরা বাকারা
২। জাহান্নাম,গজব,আজাব সংক্রান্ত সূরা ও আয়াত ।
৩। যেসব সূরা ও আয়াতে সুস্থতার কথা বলা হয়েছে সে সকল সূরা গুলোকে রুকাইয়া আয়াত বা সূরা রুকাইয়া বলা হয়। যেমনঃ
- সূরা তাওবাহ এর ১৪ আয়াত
- সূরা ইউনুস এর ৫৭ আয়াত
- সূরা নাহল এর ৬৯ আয়াত
- সূরা বনি ইসরাইল এর আয়াত ৮২
- সূরা শুআরা এর আয়াত ৮০
- সূরা হা-মীম সাজদা এর আয়াত ৪৪
এবং আরো অনেক সূরা।
রুকাইয়া আয়াত সমূহ দেওয়া হলো
যুদ্ধ কর ওদের সাথে, আল্লাহ তোমাদের হস্তে তাদের শাস্তি দেবেন। তাদের লাঞ্ছিত করবেন, তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের জয়ী করবেন এবং মুসলমানদের অন্তরসমূহ শান্ত করবেন। (আত তওবাহ আয়াত নং- ১৪ )
হে মানবকুল, তোমাদের কাছে উপদেশবানী এসেছে তোমাদের পরওয়ারদেগারের পক্ষ থেকে এবং অন্তরের রোগের নিরাময়, হেদায়েত ও রহমত মুসলমানদের জন্য। (সূরা ইউনুস আয়াত নং- ৫৭)
ُمَّ كُلِى مِن كُلِّ الثَّمَرٰتِ فَاسْلُكِى سُبُلَ رَبِّكِ ذُلُلًا ۚ يَخْرُجُ مِنۢ بُطُونِهَا شَرَابٌ مُّخْتَلِفٌ أَلْوٰنُهُۥ فِيهِ شِفَآءٌ لِّلنَّاسِ ۗ إِنَّ فِى ذٰلِكَ لَءَايَةً لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ (সূরা আন-নাহল আয়াত নং- ৬৯)
ثوَنُنَزِّلُ مِنَ الْقُرْءَانِ مَا هُوَ شِفَآءٌ وَرَحْمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِينَ ۙ وَلَا يَزِيدُ الظّٰلِمِينَ إِلَّا خَسَارًا (সূরা বনি- ইসরাইল আয়াত নং- ৮২)
وَإِذَا مَرِضْتُ فَهُوَ يَشْفِينِ (সূরা শু’আয়ারা আয়াত নং- ৮০)
وَلَوْ جَعَلْنٰهُ قُرْءَانًا أَعْجَمِيًّا لَّقَالُوا لَوْلَا فُصِّلَتْ ءَايٰتُهُۥٓ ۖ ءَا۬عْجَمِىٌّ وَعَرَبِىٌّ ۗ قُلْ هُوَ لِلَّذِينَ ءَامَنُوا هُدًى وَشِفَآءٌ ۖ وَالَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ فِىٓ ءَاذَانِهِمْ وَقْرٌ وَهُوَ عَلَيْهِمْ عَمًى ۚ أُولٰٓئِكَ يُنَادَوْنَ مِن مَّكَانٍۭ بَعِيدٍ (সূরা হা-মীম আস-সাজদাহ্ আয়াত নং- ৪৪)
সূরা রুকাইয়া
১। তিন কূলঃ সূরা ইখলাস,সূরা ফালাক,সূরা নাস।
- সূরা আল-ইখলাস
قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ اللَّهُ الصَّمَد لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ وَلَمْ يَكُن لَّهُۥ كُفُوًا أَحَدٌۢ
- সূরা আল-ফালাক
قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَق مِن شَرِّ مَا خَلَقَ وَمِن شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ وَمِن شَرِّ النَّفّٰثٰتِ فِى الْعُقَدِ وَمِن شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ
- সূরা আন-নাস
قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ إِلٰهِ النَّاسِ مِن شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ الَّذِى يُوَسْوِسُ فِى صُدُورِ النَّاسِ مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ
২। চার কূলঃ সূরা কাফিরুন এবং সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক, সূরা নাস।
- সূরা কাফিরুন
قُلْ يٰٓأَيُّهَا الْكٰفِرُونَ لَآ أَعْبُدُ مَا تَعْبُدُونَ وَلَآ أَنتُمْ عٰبِدُونَ مَآ أَعْبُدُ وَلَآ أَنَا۠ عَابِدٌ مَّا عَبَدتُّمْ وَلَآ أَنتُمْ عٰبِدُونَ مَآ أَعْبُدُ لَكُمْ دِينُكُمْ وَلِىَ دِينِ
৩। বিশেষ আট সূরাঃ
- সূরা ইয়াসিন,
- সূরা সফফাত,
- সূরা দুখান,
- সূরা জিন,
- সূরা যিলযাল,
- সূরা ইখলাস,
- সূরা ফালাক,
- সূরা নাস,
রুকইয়াহ এর স্তর-
আমরা রুকইয়াকে তিন স্তরে ভাগ করতে পারি। যেমনঃ
প্রথমত, সর্বোত্তম রুকইয়াঃ রসূল (সাঃ) এবং সাহাবী রাঃ যেসব দো’আ এবং আয়াত দ্বারা রুকইয়াহ করেছেন।
দ্বিতীয়ত, উত্তম রুকইয়াঃ কুরআনে যে সকল আয়াত আক্রান্ত ব্যেক্তির সমস্যা সমাধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যশীল সে সকল আয়াত দ্বারা রুকইয়া করা।
যেমনঃ যাদুগ্রস্থ ব্যাক্তির জন্য সূরা আরাফ এর আয়াত ১১৭-১২২,সূরা ইউনুস এর আয়াত ৮১-৮২
তৃতীয়ত, বৈধ রুকইয়াঃ এছাড়া রসূল (সাঃ) এর হাদিসে বলা কিছু দোআ দিয়ে রুকইয়া করতে পারেন। নিজে থেকেও কিছু দোআ করা জাই তবে তা সরঈ বিধানের সীমারেখার মধ্যে থাকতে হবে ।
যেমনঃ সূরা ফাতেহা,সূরা ফালাক,সূরা নাস। আবার কুরআনে অথবা বিশুদ্ধ সূত্রে হাদীসে বর্ণিত অন্যান্য নবীগনের দোআ গুলো সর্বোত্তম রুকাইয়া’র অন্তর্গত।
আবার জীন আক্রান্ত ব্যাক্তির জন্য সূরা বাকারা এর আয়াত ১০২,সূরা জীন এর আয়াত ১-৯ আয়াতগুলো হলো উত্তম রুকাইয়া।
আবার বদনজর আক্রান্ত ব্যাক্তির জন্য সূরা ইউসুফ এর আয়াত ৬৭, সূরা কাহাফ এর আয়াত নং ২৯ এগুলো হলো বৈধ রুকাইয়া।
মাহরাম ব্যাতিত রুকাইয়া করার নিয়ম
রাসুল (সাঃ) এবং সাহাবীরা ছিলেন আমাদের জন্য সর্বোত্তম আদর্শ। দুনিয়া এবং আখিরাতের জন্য প্রতিটা মুমিনের তাদের অনুসরণ করা অপরিহার্য। তাই এবার আমরা এবার রসূল (সাঃ) ও সাহাবীদের রুকইয়া করার কিছু নিয়ম দেখবো।
১। দোআ অথবা আল্ল-হ্র আয়াত তিলাওয়াত করা।
যেমনঃ আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত জিবরীল (আঃ) রাসুল (সাঃ) এর কাছে এসে বললেন হে মুহাম্মদ, আপনি কী আল্ল-হ্ র কাছে আপনার সমস্যার ব্যাপারে অভিযোগ করেছিলেন? তিনি বললেন হ্যা। জিবরীল (আঃ) বললেন, (আমি আপনাকে আল্ল-হ্ র নামে রুকইয়া করছি-সেই সব জিনিস থেকে যা আপনাকে কষ্ট দিচ্ছে। সকল প্রাণের অনিষ্ট কিংবা হিংসুকের বদনজর থেকে আল্ল-হ্ আপনাকে আরোগ্য দান করুক; আমি আল্ল-হ্ র নামে রুকইয়াহ করছি)
২। রোগির মাথায় অথবা আক্রান্ত অঙ্গে হাত রেখে তিলাওয়াত করা।
রসূল (সাঃ) তাকে বললেন তোমার শরীরের যে জায়গায় ব্যাথা হয় তার উপরে হাত রেখে সাত বার বলবে (অর্থঃ আমি আল্ল-হ্ র সম্মান এবং তার ক্ষমতার আশ্রয় নিচ্ছি, যা আমি অনুভব করি এবং যা আমি আশঙ্কা করি, তার অকল্যাণ থেকে) ।
রুকইয়াহ এর কিছু উপকরণঃ
১। রুকইয়ার পানিঃ
সবচেয়ে উত্তম হলো যমযমের পানি। যমযমের পানির উপর রুকইয়ার আয়াত পড়লে এর উপকারিতা আরো বহুগুন বেড়ে যায়।
(আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে রসূল (সাঃ) বলেছেন,পৃথীবির বুকে সর্বোত্তম পানি যমযমের পানি, যাতে রয়েছে ক্ষুধার্তের জন্য খাদ্য এবং অসুস্থতার জন্য আরোগ্য।}
তারপড়ে উত্তম হলো বৃষ্টির পানি।
এই দুইটির কোনোটি না পালে সাধারণ পানি হলেও চলবে।
রসূল(সাঃ) চিকিৎসার জন্য সাধারণ পানি ব্যবহার করেছেন।
ব্যবহারঃ এই পানি সাধারণত পান করার জন্য এবং গোসল করার জন্য ব্যবহার করা হয়। এ ছড়া এ পানি রোগীর গায়ে রুকইয়াহ চলাকালিন ছিটিয়ে দেওয়া হয়। এবং তাবিজ বা জাদুর কিছু পাওয়া গেলে এ পানিতে ডুবিয়ে নষ্ট করে দেওয়া হয়।
২। মধু ও কালোজিরাঃ
আল্ল-হ্ সূরা নাহল এর আয়াত ৬৯ এ বলেছেন যে,
ثُمَّ كُلِى مِن كُلِّ الثَّمَرٰتِ فَاسْلُكِى سُبُلَ رَبِّكِ ذُلُلًا ۚ يَخْرُجُ مِنۢ بُطُونِهَا شَرَابٌ مُّخْتَلِفٌ أَلْوٰنُهُۥ فِيهِ شِفَآءٌ لِّلنَّاسِ ۗ إِنَّ فِى ذٰلِكَ لَءَايَةً لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ
“তার (মৌমাছির) পেট থেকে বিভিন্ন রঙের পানিয় বের হয়, তাতে মানুষের জন্য রয়েছে রোগের প্রতিকার” এবং (কালোজিরা) আবু হুরাইরাহ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা এই কালো বীজ (কালোজিরা) নিজেদের জন্য ব্যবহারকে বাধ্যতামূলক করে নাও। কেননা, মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের নিরাময় এর মধ্যে রয়েছে। ‘
আস-সাম’ অর্থ ‘মৃত্যু’।
ব্যবহারঃ কালো জিরা সাধারনত মধুর সাথে খাওয়া হয়,তবে কালোজিরা শুধু চিবিয়েও খাওয়া যায়। এছাড়া কালোজিরার তেল খুবই উপকারী।
৩। যাইতুনের তেল ও খেজুরঃ
আবূ উসাইদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা যাইতূনের তেল খাও এবং তা শরীরে মালিশ কর। কেননা এটি একটি কল্যাণময় গাছের তেল।
ব্যবহারঃ রুকইয়াহ করার সময় যাইতুনের তেল শরীরে ও মাথায় মালিশ করার জন্য ব্যবহার করা হয়। এবং খেজুরঃ সাদ ইবনু আবি ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ (রসূল (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যেক্তি সকাল বেলায় সাতটি আজওয়া খেজুর খাবে সেদিন তাকে কোনো বিষ বা জাদু ক্ষতি করবে না)।
যে কোনো উন্নত মানের আজওয়া খেজুর চিকিৎসার জন্য উপকারী হবে ইংশা আল্ল-হ্। রুকাইয়ার জন্য খুবই ভালো।
৪। সদকা করা ও দোআ করাঃ
আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রসূল (সাঃ) বলেছেন তোমাদের সম্পদ হেফাজত করো যাকাত প্রদানের মাধ্যমে, তোমাদের রোগের চিকিৎসা করো সদকার মাধ্যমে, আর তোমাদের বিপদ দূর করো দোআর মাধ্যমে।
ব্যবহারঃ রুকইয়াহ করার নিয়ম এর মধ্যে রুকাইয়াহ করার সময় রোগ মুক্তির জন্য দান-সদকা রোগীকে তারা তারী সুস্থ করে দিবে ইংশ-আল্ল-হ্। আর দোআ তো অবশ্যয় সবসময় করতে হবে। সবচেয়ে বেশি ভালো হয় আমাদের নবী যে সকল রোগ মুক্তির জন্য দোআ করেছেন সেগুলো করা। আবার নিজে থেকেও দোআ করা যায়।
৫। তাওবা বা ইস্তিগফারঃ
বেশি বেশি ইস্তিগফার করলে মহান আল্ল-হ্ বিপদ, দুশ্চিন্তা ও অন্যান্য অনেক কিছু থেকে আল্ল-হ্ সহজেই মুক্তি দেন। কোনো পাপের কারনে যদি বিপদ আসে তবে তাওবা এর কোনো বিকল্প নেই। মহান আল্ল-হ, সূরা নূহ এর আয়ার ১০-১২ আর মধ্যে বলেছেন, অতঃপর বলেছিঃ তোমরা তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমা প্রার্থনা কর। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের উপর অজস্র বৃষ্টিধারা ছেড়ে দিবেন, তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি বাড়িয়ে দিবেন, তোমাদের জন্যে উদ্যান স্থাপন করবেন এবং তোমাদের জন্যে নদীনালা প্রবাহিত করবেন।
ব্যবহারঃ বিপদের সময় নিজের আপরাধের জন্য প্রচুর পারিমানে তওবা করা উচিত। যেকোনো সময় যেখানে সেখানো তাওবা করে সময় টাকে অনেক মূল্যবান বানানো যায়।
৬। রুকইয়ার তিলাওয়াতঃ
রুকইয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি উত্তম নিজে কোরআন পাড়া । যদি তাও না পাড়ি তাহলে অন্য কোনো ব্যাক্তি কোরআন পাড়ে তার কাছে যাওয়া। তবে বেশির ভাগ মানুষ আছেন যারা ইউটিউব থেকে রুকইয়াহর ভিডিও দেখে রুকইয়া করে তা একেবারেই উচিত না। কারণ ইউটিউব এ ভুল তথ্য থাকে এবং বিভ্রান্তীকর তথ্য ছড়ানো থাকে। বেশ কিছু সময় ধরে আমাদের দেশের সাধারন মানুষ ইউটিউব দেখে বিভ্রান্ত হয়ে ছিলো এবং এর বিষাক্ততা আমাদের দেশের অলিতে গলিতে ছরিয়ে আছে। আবার অনেক এ জাদু টোনা করে তাই ইউটিউব দেখে রুকইয়া না করে নিজে কিংবা বিজ্ঞদের/ আলেমদের/ মুফতিদের/ মুহাদ্দিস এবং রাক্বীদের থেকে শেখায় ভালো।
৭। রুকইয়ার গোসলঃ
রুকইয়াহ করা শেষ হওয়ার পরে রুকাইয়াহ গোসল করলে অনেক টা স্বস্তি বোধ হয় এবং শান্তি পাওয়া যাই। রুকইয়ার গোসল করার পদ্ধতি বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হাদিসে পাওয়া যায়।
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
“তিনি বলেন, যেই ব্যাক্তির বদনজর অন্য ব্যাক্তির উপর লাগতো, তাকে ওযু করার নির্দেশ দেওয়া হতো। এরপর ওই ব্যাক্তির অজু করা পানি দিয়ে সেই ব্যাক্তিকে (যার উপর নজর লেগেছে) গোসল করানো হতো, যার উপর বদনজর লেগেছে।“
অন্য আরেকটি সূত্রে বর্ণিত
একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাবিত ইবনু ক্বায়িস (রাঃ)- এর নিকট গেলেন। আহমাদ বলেন, তিনি তখন অসুস্থ ছিলেন। তিনি বলেনঃ হে মানুষের রব! সাবিত ইবনু ক্বায়িস ইবনু শাম্মাসের রোগ দূর করে দিন। অতঃপর তিনি বাতহান নামক উপত্যকার কিছু ধুলামাটি নিয়ে একটি পাত্রে রাখলেন এবং পানিতে মিশিয়ে তার দেহে ঢেলে দিলেন।
বিভিন্ন যুগের আলিমদের মতে গোসলঃ
অয়াহাব ইবনুল মুনাব্বিহ (রহঃ) বলেছেন এমন ভাবে যে “ সাতটি বরইয়ের পাতা পিষে পানিতে দিয়ে নাড়তে থাকুন এবং আয়াতুল কুরসী, সূরা ফালাক, সূরা নাস পড়ে ফুঁ দিন তারপর সেই পানি তিন চুমুক পান করুন এবং বাকিটা দিয়ে গোসল করুন।
আবার কিছু-কিছু আলিম বলেছেনঃ
পানিতে সূরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসী, সূরা আরাফ এর আয়াত ১০৬-১২২, সূরা কাফিরুন, ইখলাস (৩ বার, সূরা ফালাক ৩ বার, সূরা নাস ৩ বার সাথে পারলে আরো কিছু আয়াত ও দোআ পাঠ করা।
No comments:
Post a Comment